News

করোনা মোকাবেলায় বেসরকারি ব্যাংকসমূহের করণীয় সম্পর্কে বিডব্লিউএবি এর পরামর্শ
২৫ জুলাই ২০২০ | ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ


কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় ব্যাংক বিশেষত বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহের করণীয় সম্পর্কে ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি) এর প্রেসিডেন্ট কাজী মো: শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে একটি বিবৃতিতে আজ শনিবার ২৫ জুলাই, ২০২০ পাঠানো হয়েছে। উক্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে -
ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি) মনে করে, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় দেশের বিভিন্ন সেক্টরের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ অত্যন্ত সময়োচিত এবং বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত। এই প্রণোদনা প্যাকেজ সমূহের যথাযথ বাস্তবায়নে ব্যাংকের ভূমিকা অতিব গুরুত্বপূর্ণ।এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও পরামর্শ দিয়ে সকল ব্যাংকে যথাসময়ে সার্কুলার জারি করেছে।
উল্লেখিত প্রণোদনা প্যাকেজ যথাযথ বাস্তবায়নে ব্যাংক সমূহের প্রয়োজন - সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সতর্কতার সাথে উক্ত পরিকল্পনা সমূহের বাস্তবায়ন। উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম, ব্যাংকের দৈনন্দিন নিয়মিত কাজ সমূহ এবং কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে ব্যাংকের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার প্রয়োজনে কর্মী বাহিনীকে উদ্দীপ্ত ও সম্পৃক্ত রাখা অতিব জরুরী। এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও কর্মী বাহিনীকে উদ্দীপ্ত রাখার জন্য ব্যাংকগুলোকে ইতিপূর্বে সার্কুলার জারি করেছে।
কিন্তু ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি) বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা এবং খবরের কাগজের মাধ্যমে নিম্নোক্ত বিষয় সমূহ জানতে পেরেছে, যা অতিশয় হতাশা ব্যঞ্জক।
১। কতিপয় বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদত্যাগ পত্র জমা দিতে বাধ্য করেছে; যেমন - এবি ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড।
২। কতিপয় বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন কমানো হয়েছে; যেমন - ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড, এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড, এবি ব্যাংক লিমিটেড এবং সিমান্ত ব্যাংক লিমিটেড।
৩। কতিপয় বেসরকারি ব্যাংক অদ্যাবধি প্রণোদনা সুবিধা বাস্তবায়ন করেনি; যেমন - প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, সাইথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, এবি ব্যাংক লিমিটেড, মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড এবং ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড।
তাই ব্যাংক সমূহের কর্মকর্তাদের মধ্যে চাকুরি হারানো, বেতন কমানো, প্রণোদনার সুবিধা না পাওয়ার ভয় ও অসন্তোষ রয়েছে। এর ফলে ব্যাংকের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং ভবিষ্যতে ব্যাংকের গ্রাহকগণের আস্থা অর্জনে সমস্যা তৈরি হতে পারে যা ব্যাংকের আর্থিক সুরক্ষায় ভাল ফল বয়ে আনবে না।
তবে কতিপয় ব্যাংকের বিষয়ে আশা ব্যঞ্জক সংবাদ রয়েছে:
১। যে সকল বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন কমানো হবে না মর্মে ঘোষণা দিয়েছে; যেমন - সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, ইউসিবিএল, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড।
২। যে সকল ব্যাংক প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করেছে; যেমন - জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবিসি, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, ইউসিবিএল এবং সকল ইসলামী ব্যাংক। উল্লেখ্য যে, সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত বোনাস প্রদান করেছে।
৩। যে সকল ব্যাংক প্রণোদনা বাস্তবায়ন করার ঘোষণা দিয়েছে; যেমন - পূবালী ব্যাংক লিমিটেড ও ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড।
এমতাবস্থায় ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি) নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির প্রভাবে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় ব্যাংকগুলোকে বিশেষ করে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহের করণীয় সম্পর্কে নিম্নোক্ত পরামর্শ প্রদান করেছে।
ব্যাংকের আয় বাড়ানো
ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি) মনে করে কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় ব্যাংক সমূহের আয় বাড়ানোর জন্য নিম্নোক্ত কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে:
১। সরকার কর্তৃক বাণিজ্যিক ব্যাংকের বর্তমানে নির্ধারিত কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর ব্যাপারে ব্যাংকগুলো আবেদন করতে পারে।
২। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংক সমূহের কনজ্যুমার লোনের (পারসোনাল লোন, হোম লোন, কার লোন ইত্যাদি) উপর লোনের সুদহার কমপক্ষে ২% বাড়ানো যেতে পারে, যেহেতু উক্ত লোনগুলোর তদারকি খরচ বেশি।
৩। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক Unsecured Personal Loan Credit Card এর NPL এর বিপরীতে জেনারেল প্রভিশন ২% নির্ধারণ করা যেতে পারে।
৪। বাংলাদেশ ব্যাংক আরো নতুন Refinance Credit Scheme চালু করার জন্য পুনর্বিবেচনা করতে পারে।
৫। কোন ব্যাংকের লোকসান হলে এবং ডিভিডেন্ট প্রদান করা সম্ভব না হলে পরবর্তী অন্তত ২ বৎসর উক্ত ব্যাংকের শেয়ারকে জেড-ক্যাটাগরি তে অন্তর্ভূক্ত না করা।
৬। ব্যাংক সমূহের মাধ্যমে সরকারি ট্যাক্স ও ভ্যাট আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট কমিশন নির্ধারণ করা যেতে পারে। (ব্যাংকগুলো প্রতিবছর উৎসে কর, ভ্যাট এক্সাইজ ডিউটি এবং অন্যান্য সরকারি পাওনা আদায় করে নিজ দায়িত্বে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। পাশাপাশি বিভিন্ন বিবরণী প্রস্তুত করে সরবরাহ করতে হয়। সরকার কোনও লোকবল, স্টেশনারি বা অন্য কোনও খরচ ছাড়াই ব্যাংকের মাধ্যমে বিপুল রাজস্ব আদায় করে থাকে।)
৭। ইউটিলিটি বিল সহ অন্যান্য সকল সরকারি-বেসরকারি সেবা প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করা যেতে পারে। (বিদ্যুৎ, ওয়াসা, টেলিফোন ইত্যাদি ইউটিলিটি বিল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিল, ফি এবং কিস্তি ব্যাংকের মাধ্যমে বিনা চার্জ বা কমিশনে আদায় হয়। অনলাইন পোস্টিং এর মাধ্যমে গ্রাহকের হিসাবও হালনাগাদ হয়ে যাচ্ছে।)
৮। সরকারি, আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্তশাষিত প্রতিষ্ঠান সমূহের আদায়কৃত অর্থ আদায়কারী ব্যাংকে চলতি হিসেবে (কারেন্ট ডিপোজিট) এক মাস রাখার জন্য অনুমতি প্রদান করা হলে, ব্যাংকের কস্ট অব ডিপোজিট কমবে।
৯। সকল ব্যাংক একত্রে অনলাইন/ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার জন্য নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করতে পারে। (অনলাইন/ইন্টারনেট ব্যাংকিং ইত্যাদি প্রযুক্তিগত সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রাহকদের টাকা স্থানান্তর সহ আরও অনেক সেবা অত্যন্ত সহজসাধ্য এবং নিরাপদ হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের কারণে টাকা স্থানান্তর এবং অন্যান্য সেবার খরচ প্রায় শুন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। তাই সকল ব্যাংক মিলে সমহারে অনলাইন সেবার চার্জ নির্ধারণ করা যেতে পারে।)
১০। প্রয়োজনে ক্লিয়ারিং, বিএফটিএস, আরটিজিএস সেবা ফি বাড়ানো যেতে পারে, যা বর্তমানে নামমাত্র মূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।
১১। সরকারি এবং আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহ বেসরকারি ব্যাংক থেকে কারেন্ট ডিপোজিট ও শর্ট টার্ম ডিপোজিট সেবা গ্রহণ করতে পারে, এতে বেসরকারি ব্যাংক সমূহের তারল্য সংকট দূর হবে।
১২। তাছাড়াও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অন্যান্য বাস্তব সম্মত সিদ্ধান্ত সমূহের বাস্তবায়ন।
ব্যাংকের ব্যয় কমানো
ব্যাংক সমূহের ব্যয় কমানোর জন্য নিম্নোক্ত কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে:
১। অবকাঠামো/স্থাপনা ব্যয় কমানোর জন্য উচ্চ মূল্যে ভাড়াকৃত অফিস পরিবর্তন করে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে নেয়া যেতে পারে।
২। ডিভিশন এবং ডিপার্টমেন্ট সমূহকে অধিক জায়গা ব্যবহার না করে অপেক্ষাকৃত কম জায়গায় সংকুলান বা স্থানান্তর করা যেতে পারে।
৩। প্রয়োজনে উচ্চমূল্যে সফটওয়্যার ক্রয় এবং ব্যবহারের খরচ কমানো যেতে পারে।
৪। বিদেশ ভ্রমন এবং বিদেশে প্রশিক্ষণ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ রাখা যেতে পারে।
৫। ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্ব্দ্ধু করে অফিস সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার মাধ্যমে ইউটিলিটি বিল খরচ কমানোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
৬। স্টেশনারী খাতের খরচ যথাসম্ভব কমানো যেতে পারে।
৭। যথাযথ প্রযুক্তি সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রমের খরচ কমানো যেতে পারে।
৮। তাছাড়াও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অন্যান্য বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।
বিভিন্ন গবেষণা এবং বাস্তব অবস্থার ভিত্তিতে দেখা যায় যে, কর্মকর্তাদের অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ করণ সংকটকালীন সময়ে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। যা একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে। বাংলাদেশে ব্যাংকিং হচ্ছে একটি সুসংগঠিত এবং স্থিতিশীল সেক্টর। তাই যে কোন নেতিবাচক পদক্ষেপ এই সেক্টরের উন্নয়ন এবং বিকাশে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। যা অন্যান্য বেসরকারি খাতকেও প্রভাবিত করতে পারে। এর ফলে ভবিষ্যতে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ধারাবাহিক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে পারে, যা আমাদের কারও কাম্য নয়।
উক্ত বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি) আশা এবং বিশ্বাস করে যে, সকল বেসরকারি ব্যাংক কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করার জন্য সকল নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসবে। একই সাথে ব্যাংক সমূহ ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ করে তাদের থেকে শতভাগ শ্রম ও মেধা গ্রহনের মাধ্যমে ব্যাংকের উন্নয়ন এবং বিকাশ অব্যাহত রাখবে।
এছাড়া কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায়, ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি) এর পক্ষ থেকে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ এবং পরিচালনা পর্ষদের নিকট মানবিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনা করে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ সমূহ বাস্তবায়ন করে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং বিকাশ অব্যাহত রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে:
১। কর্মকর্তাদের চাকুরিচ্যুত না করা;
২। কর্মকর্তাদের পদত্যাগ পত্র জমা দানে বাধ্য না করা (বিশেষ করে কোভিড-১৯ লকডাউন সময়ে, সরকার ঘোষিত সাধারন ছুটিকালীন সময়ে, রোস্টার ডিউটিতে কাজ করার সময় বা কোভিড-১৯ মহামারিতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে কর্মকর্তাদের অসন্তোষজনক কর্মের কারণ দেখিয়ে);
৩। কর্মকর্তাদের বেতন এবং অন্যান্য ভাতা/সুবিধা না কমানো;
৪। কর্মকর্তাদের বাৎসরিক সাধারন ইনক্রিমেন্ট এবং পদোন্নতি বন্ধ না করা;
৫। ব্যাংকের লভ্যাংশ অনুপাতে কর্মকর্তাদের ইনসেন্টিভ বোনাস চালু রাখা;
৬। সকল ব্যাংকে কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে একই ক্রাইটেরিয়া অনুসরণ করা;
৭। সকল ব্যাংকে একই ধরনের Grade/Designation নির্ধারণ করা (যেমন- অফিসার, সিনিয়র অফিসার, প্রিন্সিপাল অফিসার, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার, এভিপি, ভিপি, এসভিপি, ইভিপি, এসইভিপি ইত্যাদি);
৮। সরকার ঘোষিত এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত সার্কুলার লেটার অনুযায়ী ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রণোদনা, বিশেষ স্বাস্থ্য বীমা ও বিশেষ অনুদান অতি সত্বর প্রদানের ব্যবস্থা করা।

ব্যাংককে আয় বাড়ানোর পরামর্শ বিডব্লিউএবির
২১ জুন ২০২০ | দেশ রূপান্তর


বেতন-ভাতা কমানোর চিন্তা থেকে বেরিয়ে ব্যাংকের ব্যয় কমানো ও আয় বাড়ানোর বাস্তবভিত্তিক পন্থা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে ব্যাংকারদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি)।
গতকাল বিডব্লিউএবির প্রেসিডেন্ট কাজী মো. শফিকুর রহমান বিবৃতিতে এ পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও এবি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ বাণিজ্যিক ব্যাংক মনে করে বেতন-ভাতা কমানো করোনাসংকট মোকাবিলার সমাধান হতে পারে না। বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত কর্মকর্তাদের হতাশাগ্রস্ত করবে, তারা কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। ব্যাংক খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বিবৃতিতে বিডব্লিউএবি জানায়, করোনা ও অন্য যেকোনো আর্থিক সংকট মোকাবিলায় কর্মকর্তাদের অনুপ্রেরণা দিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। যাতে তারা নিশ্চিন্তে ব্যাংকের উন্নয়ন ও গতিশীলতায় যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে। করোনা মহামারীর শুরুতে সরকারি অফিসগুলোয় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ব্যাংক কর্মকর্তারা সে সময়ও ডাক্তার এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবাকর্মী, সেনাবাহিনী, পুলিশের মতো প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্রমতে, এ পর্যন্ত করোনায় অন্তত ২০ ব্যাংক কর্মকর্তা মারা গেছেন এবং আনুমানিক ২০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত অমানবিক হবে বলে মনে করে বিডব্লিউএবি। এ ছাড়া ব্যাংক খাতে কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমানোর পদক্ষেপ অন্যান্য খাতকেও প্রভাবিত করতে পারে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে, যা কোনো অবস্থায়ই কাম্য নয়। অতএব ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমানোর চিন্তা না করে বাংকগুলোর উচিত অন্যান্য সম্ভাব্য খাতে ব্যয় কমানো ও আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া। এ ক্ষেত্রে বিডব্লিউএবি পরামর্শ দিয়েছে। যেমন সরকার কর্তৃক বাণিজ্যিক ব্যাংকের করপোরেট ট্যাক্স কমানোর ব্যাপারে ব্যাংকগুলোর আবেদন করা। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংকগুলোর কনজ্যুমার লোনের ওপর সুদহার কমপক্ষে ২ শতাংশ বাড়ানো। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনিরাপদ ব্যক্তিগত ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডের শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে জেনারেল প্রভিশন ২ শতাংশ নির্ধারণ করা। কোনো ব্যাংকের লোকসান হলে এবং ডিভিডেন্ট করা সম্ভব না হলে পরবর্তী অন্তত দুই বছর ওই ব্যাংকের শেয়ারকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত না করা। তদুপরি পরিচালনা ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়া।