News
ব্যাংক কর্মীদের বেতন না কমিয়ে আয় বাড়াতে ৫ পরামর্শ ২০ জুন ২০২০ | ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ
বেতন-ভাতা কমানোর চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে ব্যাংকের ব্যয় কমানো ও আয় বাড়ানোর বাস্তবভিত্তিক পন্থা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে ব্যাংকারদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি)। আজ শনিবার (২০ জুন) বিডব্লিউএবি'র প্রেসিডেন্ট কাজী মো: শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে এ পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও এবি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ বাণিজ্যিক ব্যাংক মনে করে বেতন-ভাতা কমানো করোনাসংকট মোকাবিলার সমাধান হতে পারে না। বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত কর্মকর্তাদের হতাশাগ্রস্ত করবে, তারা কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে এবং ব্যাংক সেক্টরে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিবৃতিতে করোনা ও অন্যান্য যে কোন আর্থিক সংকট মোকাবিলায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের অনুপ্রেরণা দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। যাতে তারা নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে ব্যাংকের উন্নয়ন ও গতিশীলতায় যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করে বিডব্লিউএবি। করোনা মহামারীর আবির্ভাবের প্রারম্ভে সরকারি সব অফিসে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ব্যাংক কর্মকর্তারা সে সময়ও ডাক্তার এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবাকর্মী, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য সম্মুখ যোদ্ধাদের মতো প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে এসেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্র মতে, এ পর্যন্ত করোনায় অন্তত ২০ ব্যাংক কর্মকর্তা মারা গেছেন এবং আনুমানিক ২০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ভয়াবহ এ পরিস্থিতিতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত অমানবিক হবে বলে মনে করে বিডব্লিউএবি। এ ছাড়া ব্যাংকিং সেক্টরে কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে তা অন্যান্য সেক্টরকেও প্রভাবিত করার আশঙ্কা রয়েছে । ফলে দেশের অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব প্রতিফলিত হবে, যা কোনো অবস্থায়ই কাম্য নয়। অতএব ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা কমানোর চিন্তা না করে বাংকগুলোর উচিত অন্যান্য সম্ভাব্য খাতে ব্যয় কমানো ও আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া। ১) সরকার কর্তৃক বাণিজ্যিক ব্যাংকের করপোরেট ট্যাক্স কমানোর ব্যাপারে ব্যাংকগুলোর আবেদন করা। ২) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংকগুলোর কনজ্যুমার লোনের (হোম লোন, কার লোন ইত্যাদি) ওপর সুদহার কমপক্ষে ২ শতাংশ বাড়ানো (যেহেতু উক্ত লোনগুলোর তদারকি খরচ বেশি)। ৩) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক Unsecured Personal Loan ও ক্রেডিট কার্ডের শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে জেনারেল প্রভিশন ২ শতাংশ নির্ধারণ করা। ৪) কোনো ব্যাংকের লোকসান হলে এবং ডিভিডেন্ট করা সম্ভব না হলে পরবর্তী অন্তত দুই বছর ওই ব্যাংকের শেয়ারকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত না করা। ৫) তদুপরি পরিচালনা ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়া।
ব্যাংকারদের বেতন না কমানোর দাবি বিডব্লিউএবির ১৭ জুন ২০২০ | যুগান্তর
ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা না কমানোর দাবি জানিয়েছে ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি)। মঙ্গলবার এ বিষয়ে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে ব্যাংকারদের নিয়ে গঠিত সংগঠন বিডব্লিউএবি। বিডব্লিউএবির প্রেসিডেন্ট কাজী মো. শফিকুর রহমান জানান, সম্প্রতি বিএবি ব্যাংক কর্মীদের বেতন-ভাতা কমানোর বেশ কিছু সুপারিশ করে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে চিঠি পাঠিয়েছে। মহামারীর সময়ে ব্যাংকাররা এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন।
ব্যাংকারদের বেতন না কমানোর আহ্বান বিডব্লিউএবি’র ১৭ জুন ২০২০ | সংবাদ
ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা না কমানোর দাবি জানিয়েছে ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি)। গতকাল এ বিষয়ে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিডব্লিউএবির প্রেসিডেন্ট কাজী মো. শফিকুর রহমান। বিডব্লিউএবির প্রেসিডেন্ট জানান, বিএবি সম্প্রতি ব্যাংক কর্মীদের বেতন-ভাতা কমানোসহ বেশ কিছু সুপারিশ করে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে পাঠিয়েছে। মহামারীর সময়ে ব্যাংকাররা এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। এ সময় কর্মীদের ব্যাংকারদের বেতন-ভাতা কমানো মানে তাদের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করা। এতে করে কর্মস্পৃহা কমে যাবে। বিডব্লিউএবি মনে করে, চলমান সংকটময় পরিস্থিতিতে ব্যাংকের কর্মচাঞ্চল্য অব্যাহত রাখার জন্য কর্মকর্তাদের মনোবল ও দক্ষতা অটুট রাখা এবং অনুপ্রেরণা ও উদ্দীপনা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। এর বিপরীতে কোন সিদ্ধান্ত নিলে ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্বভাবতই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। এসব বিবেচনায় বিডব্লিউএবির পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে : কোন অবস্থাতেই ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রাপ্ত বেতন ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা না কমানো। সাধারণভাবে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট চালু রাখা। ব্যাংকের বাৎসরিক মুনাফার ভিত্তিতে ইনসেন্টিভ বোনাস চালু রাখা। ব্যাংকের প্রণীত ক্রাইটেরিয়া অনুসরণ করে কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বিবেচনা করা এবং সব ব্যাংক যেন একই ধরনের পদোন্নতি ক্রাইটেরিয়া অনুসরণ করে তার ব্যবস্থা গ্রহণ। কর্মকর্তাদের একই গ্রেডে বিভিন্ন ধরনের ডেজিগনেশনের পরিবর্তে সব ব্যাংকে একই ধরনের (যেমন- অফিসার, সিনিয়র অফিসার, প্রিন্সিপাল অফিসার, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার, এভিপি, ভিপি ইত্যাদি) ডেজিগনেশন নির্ধারণ ও অনুসরণ করার ব্যবস্থা নেয়া। এদিকে সম্প্রতি বেতন-ভাতা কমানোসহ ১৩ দফা সুপারিশ করে বিএবির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়। সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল স্বাক্ষরিত চিঠিতে ব্যাংকগুলোতে চলমান নিয়োগসহ সব নিয়োগ বন্ধ রাখার সুপারিশও করা হয়। এছাড়া নতুন শাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং ও উপ-শাখা খোলা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। করোনাভাইরাসে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে কর্মী ছাঁটাই না করে ব্যাংক সচল রাখার জন্য প্রস্তাবগুলো দেয়া হয়েছে বলে বিএবি পক্ষ থেকে বলা হয়। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সুপারিশ বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছে বিএবি। ১৩ দফা সুপারিশ সম্বলিত চিঠিতে আরও আছে, সব প্রকার স্থায়ী সম্পদ ক্রয় বন্ধ রাখা, কর্মীদের লোকাল ও বিদেশি প্রশিক্ষণ বন্ধ রাখা, সব বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ রাখা, সব প্রকার সিএসআর, ডোনেশন, চ্যারিটি বন্ধ রাখা, পত্রিকা (প্রিন্ট ও অনলাইন) ও টেলিভিশনে সব প্রকার বিজ্ঞাপন প্রদান বন্ধ রাখা, সব কাস্টমার গেট-টুগেদার বন্ধ রাখা। এরপর বিভিন্ন মহল থেকে নানা রকম সমালোচনা শুরু হয়। এরপর বেতন কমানোর বিষয়টি ব্যাংকগুলোর হাতে ছেড়ে দিয়েছে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। বিএবি নেতারা জানিয়েছেন, ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণের সুদ ৯ শতাংশ নামিয়ে আনায় ব্যাংকের আয় কমে গেছে। এছাড়া করোনার কারণে ঋণের কিস্তি আদায় না হওয়ায় ব্যাংকগুলো বড় ধরনের আর্থিক সংকটে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাই না করে বেতন কমানোসহ বিভিন্নভাবে ব্যয়সাশ্রয়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে ব্যাংকগুলো। বিএবির সদস্যরাও এমন পদক্ষেপে সম্মতি জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল এ বিষয়ে বিএবি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এটা কোন প্রজ্ঞাপন বা প্রস্তাব নয়। কোন সিদ্ধান্তও জানাইনি আমরা। আর্থিক খাতে বর্তমানে যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তাতে টিকে থাকতে হলে ব্যাংকগুলো হয়তো খরচ কমাবে। কোন কোন ব্যাংক হয়তো জনবলের খরচ কমাবে, কোন ব্যাংক হয়তো অন্য কোন প্রক্রিয়ায় ব্যয় কমাবে। যে যেভাবে পারে সেভাবে ব্যয় কমাবে। ব্যাংকের মূল আয় হচ্ছে সুদ থেকে। কিন্তু ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনায় ব্যাংকগুলোর আয় কমে গেছে। এরমধ্যে করোনা পরিস্থিতির কারণে ঋণ ও সুদ আদায় বন্ধ থাকায় ব্যাংকগুলোর আয় একেবারেই নেই। যেখানে কোন আয় নেই, সেখানে কীভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেব। এখন কি গ্রাহকের আমানত থেকে আমরা বেতনভাতা বহন করব। করোনার কারণে ঋণের টাকা ফেরত আসছে না। এরমধ্যে ঋণের কিস্তি না দিয়ে কাউকে খেলাপি করা যাবে না। এটি জুন পর্যন্ত ছিল, যা এখন সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি, কিস্তি না দিলে খেলাপি না করার সুবিধা ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়তে পারে। এ কারণে ব্যবসা আরও খারাপ হয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে ব্যয় কমানোর খাত নিয়ে আমরা ব্যাংক মালিকরা আলোচনা করেছিলাম, যার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি এসেছে। ইতোমধ্যেই ব্র্যাক, সিটি, এবিসহ কয়েকটি ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কমিয়েছে। আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ৪০ হাজার টাকার ওপরে যাদের বেতন তাদের ১৫ শতাংশ কমানো হবে। ছাঁটাইয়ের চেয়ে বেতন কমিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক হয়ে যাবে, তখন আবার বেতন কাঠামো ঠিক করা হবে। এ বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, বেতন কমাতে হবে। এ বিষয়ে বিএবির সব সদস্যই একমত। এখন কে কত শতাংশ কমাবে সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা হচ্ছে। এটা না করলে আমাদের ব্যাংক তো চলবে না। কারণ যেভাবে ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে তাতে করে ব্যাংকগুলোর আয়ে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এরমধ্যে করোনাভাইরাসের কারণে এখন কোন আয় নেই বললেই চলে। তবে এই বিষয়ে ব্যাংক খাতের বিশেষজ্ঞরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ব্যাংকের মালিকরা বিভিন্ন সুযোগ নিলেও কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে একটি মহল। আমার মনে হয়, সরকার এই বিষয়ে নজর দিবে। এমন সীদ্ধান্ত নেয়া হলে ব্যাংকিং খাতে মেধাবিদের আগ্রহ কমে আসবে। এর কারণে ব্যংকারদের মাঝে হতাশা দেখা দিবে এবং এই খাতে আরও বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।